A ক্যাটাগরির বেতন না পাওয়া পূর্ব মেদিনীপুরের প্রায় ১৪০ জন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকার পাশে দাঁড়াল UUPTWA
উপযুক্ত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কর্মরত প্রায় ১৪০ জন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা 'A' ক্যাটাগরির বেতন থেকে বঞ্চিত রয়ে গেলেন। এমনই অভিযোগ করলেন এই জেলায় কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষক যথা গৌরাঙ্গ জানা ও বিতন কুমার শীট।
তারা জানালেন যে তাদের মতো প্রায় ১৪০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ২০১২ সালের ২ রা নভেম্বরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন চক্রের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার কাজে যোগদান করেন। কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত শিক্ষক শিক্ষন সংস্থা NCTE এর নিয়ম অনুসারে প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষকাদের ২ বছরের D.El.Ed ডিগ্রী থাকাটা বাধ্যতামূলক করা হয়। তবে যে সব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের B.Ed কোর্স করা ছিল এবং যাদের Appointment 03.9.2001 এর পর , তাদের কে Govt. Order no.996-SE(Law)/PL/5S-74 /12, dt.- 15.6.12 ও no.389 (38)-SE(EE)/PTTI-7/11, dt.-13.8.12 অনুযায়ী ODL মোডে কেবল ৬ মাসের একটি স্পেশাল কোর্স করতে হবে।যদিও সেই সময় NIOS প্রাথমিক শিক্ষকদের ট্রেনিং দেওয়া শুরুই করেনি বরং সেটা শুরু হয় ২০১৭ সাল থেকে। তবে তার অাগেই এই সকল শিক্ষক-শিক্ষিকারা ৬ মাসের কোর্সটি সম্পন্ন করেন। ফলে স্বাভাবিক নিয়মে 'A' ক্যাটাগরির শিক্ষক হিসাবে মান্যতা পাওয়া ও তার সঙ্গে বর্দ্ধিত বেতন পাবার কথা। কারণ এতে তাদের কোন দায় নেই বরং পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ Notification no.52 (40)/BPE/BRIDGE/2015 ,dt.-16/03/2015 ও Notification no.53/BPE/BRIDGE/2015, dt.-16/03/2015 অনুযায়ী তাদের সরকারীভাবে প্রশিক্ষনের ব্যাবস্থা করা হয়,শেষে মার্কশিট ও সার্টিফিকেটও দেওয়া হয়।তারপর এই সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা "A" ক্যাটাগরি বেতনের অাবেদন করলেও Govt of W.B. Order no.209 -SE(EE)/PTTI-7/11, dt.-04/03/13 এর (v) no. পয়েন্ট অনুযায়ী 'A' ক্যাটাগরির বেতনক্রম দেওয়া হচ্ছে না কারণ সেখানে বলা অাছে ১/১/১২ এর অাগে চাকুরিতে যোগদানকারী শিক্ষক-শিক্ষকারা এই সুযোগ পাবেন।কিন্তু তারা যোগদান করেন ২/১১/১২ তারিখে। অথচ দেখা যাচ্ছে অর্ডারটির নোটিশ জারি হয় তাদের যোগদানের পরে এবং সেটা জেনেও তাদের ৬ মাসের কোর্সটি করানো হয় সম্পূর্ণ সরকারী ব্যবস্থাপনায়। তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে কেন এই শিক্ষক-শিক্ষিকারা নায্য বেতন থেকে বঞ্চিত হবেন?
বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তরফ থেকে গৌরাঙ্গ বাবু এবং বিতন বাবু এটাও জানালেন যে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দিল্লিতে MHRD দপ্তর থেকে তাদের ঐ ডিগ্রীর বৈধতার ব্যাপারে ও নতুন স্কেলে বেতন প্রাপ্তির বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। NCTE থেকে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তারা জানিয়েছেন -- "a inservice primary teacher having B.Ed degree & 06 months special training, irrespective of their date of joining they are treated as qualifiefd for Primary teacher"। NCTE এর Advocate তাঁর Affidavit এ জানিয়েছেন যে 'A ক্যাটাগরি'র স্কেল দেওয়াটা রাজ্যসরকারের বিষয়। পরবর্তীকালে NIOS এর মাধ্যমে যখন 'six month training' করানোর ব্যবস্থা করা হয় তখন যে FAQ প্রকাশিত হয় তার page no.5 এ পরিষ্কার বলা আছে যাঁরা ইতিপূর্বে '06 month training' করেছেন তাঁদের পুনরায় ঐ 'training' গ্রহণ করার দরকার নেই। তবে তাদের জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্ষদের সভাপতি রাজ্যের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি কে তাদের বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করার জন্য ও সংশোধিত অর্ডার বের করার জন্য দুবার চিঠি পাঠিয়েছেন যার মেমো নং.1520/ES, dt-15/6/2017 ও নং-1545/ES, dt.30/12/2019। তবুও সেখান থেকে কোন রকম ইতিবাচক সাড়া মিলছে না। মাননীয় জেলা সভাপতি তাদের ট্রেনিং এর বিষয়ে সহমত পোষণ করেছেন অথচ নায্য স্কেলের বেতন চাইতে গেলেই তাদের বারবার বলা হয়েছে যে MHRD থেকে কোন 'Clarification' আসেনি তাই তাদের A ক্যাটাগরির বেতন দেওয়া যাচ্ছে না । অথচ NCTE উত্তর পাঠানোর পরেও 209 নং অর্ডারটি সংশোধন করা হচ্ছেনা।এদিকে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ২০১৮ সালে জারি করা গেজেট অনুযায়ী চাকরীতে যোগদান কারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যোগদানের ২ বছরের মধ্যে 'six month training' কোর্সটি করতে বলা হয়েছে। উনি আরো জানান যে তাঁদের যোগদানের পর থেকে প্রথম যে '06 month training' হয় , তাঁরা সেই ট্রেনিং টি গ্রহণ করেছিলেন। ফলে একাধিক নিয়মের যাঁতাকলে পড়ে প্রায় ১৪০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার নায্য বেতনের সমস্যার সমাধান বিশবাঁও জলে।
এই বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে দিনের পর দিন গিয়েও সমাধানে বিফল হয়ে তারা আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হন যেটি এখনও বিচারাধীন।
গৌরাঙ্গবাবুরা এও জানালেন যে ট্রেনিং এর বিষয়ে তাদের কোন ভূমিকাই নেই। সেই বিষয়ে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তা সম্পূর্ণ ভাবেই সরকারি দপ্তরের। তাই সরকার মনে করলে তাদের বঞ্চনার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে সমাধানের রাস্তা বার করতেই পারেন কিন্তু তারা সম্পূর্ণ রূপে উদাসীন। তাই তাদের মনে হচ্ছে যে তাদের অযৌক্তিক ভাবে নায্য বেতন অাটকানো হয়েছে।
গৌরাঙ্গবাবুরা সামগ্রিক বঞ্চনার বিষয়টি UUPTWA এর রাজ্য সভাপতি কে জানিয়ে তাদের সংগঠনের হস্তক্ষেপ দাবী করেছেন।বিষয়টি নিয়ে সংগঠনের সভাপতি সন্দীপ ঘোষের সঙগে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান বিষয়টির ব্যাপারে তিনি অবগত আছেন।তিনি জানান প্রায় ১৪০ জন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা সত্যিই বঞ্চিত হচ্ছেন। যাতে তদের সমস্যার আশু সমাধান হয় সে ব্যাপারে তাদের সংগঠন সার্বিক ভাবে সাহায্য করবেন।
No comments:
Post a Comment