ভয়াবহ পথদুর্ঘটনায় হারিয়ে গেছে নিজের আত্মীয় পরিজনরা, দুর্ঘটনাগ্রস্ত এলাকায় শনি মন্দির নির্মাণে ভূমি পুজো করলেন স্থানীয়রা
মধুসূদন রায়, ধূপগুড়িঃ গত কয়েক দিন আগে ধূপগুড়িতে ঘটে মর্মান্তিক পথ দূর্ঘটনা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত এলাকায় শনি মন্দির নির্মাণের জন্য ভূমি পুজো করলেন স্থানীয়রা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ধূপগুড়ি ময়নাতলি এলাকার ভট্টপাড়া এলাকার এক বিয়েবাড়িতে সেদিন ছিল বৌভাতের দিন । আয়োজন প্রায় সম্পূর্ণ । সন্ধ্যার পর থেকেই ডিজের তালে নাচ থেকে শুরু করে, খাওয়ার প্যান্ডেলে ভিড় সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। নববধূ তখন সেজেগুজে বাড়ির সদস্যদের লোকজনের আসার অপেক্ষায়। রাত প্রায় সাড়ে নয়টা নাগাদ বৌভাতের দুটি গাড়ি প্রবেশ করে বিয়ে বাড়িতে। তবে দুঃসংবাদ ও চোখে মুখে আতংকের ছাপ সাথে নিয়ে । হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় ডিজে, বন্ধ হয়ে যায় খাওয়া দাওয়া। নিস্তব্ধ বিয়েবাড়ি, অনেকেই তখন জানতে চাইছেন ঠিক কি হয়েছে। কিন্তু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন তখন সকলেই। হুড়োহুড়ি পরে গেল রাস্তার দিকে যাওয়ার জন্য। এদিকে ততক্ষণে সবাই জেনে গেছে পাঁচটি গাড়ি বৌভাতের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছিল। যার তিনটি গাড়ি পাথর বোঝাই ডাম্পারের নীচে চাপা পড়েছে। দূর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা সহ পুলিশ ও দমকল বাহিনীর কর্মীরা। বিয়ে বাড়িতে আসতে থাকে একের পর এক মৃত্যু সংবাদ। তখন নববধূকে সামাল দিতে রীতিমতো হিমসিম বরের বাড়ির সদস্যরা। কারণ মৃতরা প্রত্যেকেই নববধূর আপনজন। মূহুর্তেই বিয়ে বাড়িতে নিস্তবতা ও শোকের ছায়া নেমে আসে।
সেদিনের দূর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। অপরদিকে ঘটনার পরের দিন টুইট করে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও মূখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী মৃতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি ২ লাখ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে মূখ্যমন্ত্রী মৃতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি ২.৫০ লাখ টাকা, আহতদের ৫০ হাজার টাকা ও অল্প আহতদের ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।
দুর্ঘটনায় আপনজনদের হারিয়ে শনিবার দুর্ঘটনাস্থলে শনি মন্দির নির্মাণের জন্য ভূমি পুজো করলেন স্থানীয়রা। স্থানীয়রা জানান দুর্ঘটনাস্থলে যাতে ফের দুর্ঘটনা না ঘটে এবং মৃতদের আত্মার শান্তির জন্য ভগবান শনিদেব কে বিশ্বাস অনুযায়ী এদিন শনি মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করেন । সেদিনের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে । এবং সেই আতঙ্ক দূর করতে শনি মন্দির নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
No comments:
Post a Comment