ইলিশ প্রেমীদের জন্য সুখবর- দীর্ঘ চার দশকের পরে ফের গঙ্গায় মিলবে ইলিশ
আগামী দিনগুলিতে, লারসেন অ্যান্ড টুব্রোর জিওস্ট্রাকচারস ব্যবসায়ের একটি অনন্য প্রকল্পের জন্য, মৎস্য প্রেমীরা, বিশেষত বাঙালিরা গঙ্গা নদীতেও তাজা ইলিশ এর স্বাদ উপভোগ করতে সক্ষম হবেন। এই প্রকল্পের ফলে মাছ বাংলাদেশ থেকে সাঁতার কেটে গঙ্গা নদীতে প্রবেশ করতে সক্ষম হবে ফলে উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজ পর্যন্ত গঙ্গার ধারে মৎস্য প্রেমীরা এই প্রকল্পের সুফল হিসেবে তাজা সুস্বাদু ইলিশের মজা উপভোগ করতে পারবেন।
গঙ্গার জীববৈচিত্র্য রক্ষার লক্ষ্যে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ফারাক্কা ব্যারেজে স্লুইস গেটটি প্রতিদিন চার ঘন্টার জন্য বর্তমান স্তরের চেয়ে বেশি উচ্চতায় খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । এটি ইলিশকে ডিম্ পাড়ার জন্য পদ্মা নদীর নোনতা জল থেকে গঙ্গা নদীর মিষ্টি জলে সাঁতার কেটে আসতে সাহায্য করবে। ১৯৭৬ সালে ফারাক্কা নেভিগেশন লক তৈরির পরে প্রয়াগরাজ অবধি ইলিশ মাছের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফারাক্কায় সম্প্রতি একটি নতুন নেভিগেশন লক স্থাপনের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল যা নির্মাণ শেষ হওয়ার পরে ২০২১ সালের জুন থেকে খোলা হবে। এর ফলে চার দশকের পরে গঙ্গায় ইলিশ মাছ ডিম্ পাড়তে পারবে।
এলএন্ডটি জিওস্ট্রাকচারের হেড এন্ড চিফ এগজিকিউটিভ এস কানাপ্পান বলেন, “আমরা আনন্দিত যে জল মার্গ বিকাশ প্রজেক্টের অংশ হিসাবে ফারাক্কায় একটি নতুন নেভিগেশন লক তৈরির ও পুনর্নির্মাণের দায়িত্ব ভারতের ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (আইডাব্লুএআই) এলএন্ডটি জিও স্ট্রাকচারকে অর্পণ করেছে। প্রকল্প সংস্থাটি গঙ্গা নদীতে বাসকারী জীব বৈচিত্রের জগতে অনুকূল পরিবর্তন আনতে সচেষ্ট। ”
সাইটটি পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কায়, ফারাক্কা ব্যারেজের ফিডার ক্যানালে অবস্থিত। ফারাক্কার বর্তমান লক গেটটি ১৯৭৮ সাল থেকে কর্মরত, তবে তার অদক্ষতার কারণে আইডাব্লুএআই আধুনিক প্রযুক্তির নতুন লক প্রস্তাব করেছে যাতে থাকবে মিটার গেটস, সিজন গেটস, বাল্ক হেড গেটস এবং রেডিয়াল গেট যা কালভার্টস গুলিতে জল ভরে এবং যা একটি কন্ট্রোল রুম থেকে সমস্ত গেটগুলিকে দূরনিয়ন্ত্রিত করা যায় ।
কলকাতা থেকে ২৮০ কিলোমিটার দূরে ফারাক্কা ব্যারেজে নতুন নেভিগেশনাল লক তৈরির কাজ কলকাতা বন্দরের জন্য নতুন জীবনের প্রতিশ্রুতি বাহন করছে । নতুন নেভিগেশনাল লকটি এলএন্ডটি নির্মাণ করছে এবং এর ফলে জাহাজগুলি দ্রুত নির্ঝঞ্ঝাট যাত্রা করতে পারবে । বিদ্যমান লকটি জাহাজ চলাচলের সংখ্যা দক্ষতার সাথে পরিচালনা করতে অক্ষম হওয়ায়, জাহাজগুলির লকটি পাস করার জন্য যথেষ্ট সময় লাগে। ১৫০০-২০০০ টন ক্ষমতার জাহাজ চালনার জন্য বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় জল মার্গ বিকাশ প্রকল্প এখানে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
প্রকল্পের প্রথম ধাপে হলদিয়া থেকে বারাণসী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, এই প্রসারিত অংশে ফেয়ারওয়ে, মাল্টি-মডেল টার্মিনালগুলির উন্নয়ন, রিভার নেভিগেশন সিস্টেম কে শক্তিশালীকরণ, সংরক্ষণ এর কাজ, আধুনিক নদী তথ্য ব্যবস্থা (আরআইএস) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নতুন নেভিগেশনাল লকগুলির কিছু বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে দৈর্ঘ্য ২৫০মিটার, উচ্চতা ২৫.১৫ মিটার, প্রস্থ ১৪.১৪ মিটার এবং গাইড ওয়ালগুলি দৈর্ঘে ৩০১ মিটার এবং প্রস্থে ১৫.১৪মিটারের।
No comments:
Post a Comment