কেমন আছেন ট্রাঙ্ক তৈরির কারখানার কর্মীরা?
সারাক্ষন চলছে খটাখট, ঠাং ঠুং শব্দ। দূর থেকে মনে হবে কেউ বোধ হয় অনবরত টিনের ওপরে ভাড়ি কিছু দিয়ে আঘাত করে চলেছে। হাঁ, বিষয়টি ঠিক তাই। তবে কোন গৃহস্তের বাড়ি চালের ঠিন নয়।
জি আই শিট কে মাপ ঝোঁক করে ট্রাঙ্কের রুপ দেওয়া হচ্ছে। কারণ সময় মতো অর্ডারের কাজ সরবরাহ করতে হবে। তাই সকাল থেকেই শুরু হয়ে যায় কাজ। চলে রাত পর্যন্ত। দ্রুত কাজ করতে হবে যে কারণে বাড়ন হয়েছে কর্মী সংখ্যাও। সারা বছর যেমন তেমন ভাবে চললেও ভোট আসতেই কপাল খুলেছে জলপাইগুড়ির শহর সংলগ্ন পান্ডাপাড়া কালি বাড়ি চেকপোস্ট এলাকার ট্রাঙ্ক তৈরির কারখানার কর্মীদের।
তাদের বক্তব্য বিয়ে কে কেন্দ্র করে গ্রামীণ এলাকায় ট্রাঙ্কের প্রচলন সামান্য কিছু থাকলেও শহর এলাকায় সেটা নেই বললেই চলে। যেকারণে এই শিল্প এখন তলানিতে। তাও সারা বছর ধরে কিছু কিছু সরকারি এবং ভোটের আশায় তারা বসে থাকেন। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন ৫০০ টি এবং আলিপুরদুয়ার থেকে ৩০০ টি ট্রাঙ্কের অর্ডার এসেছে। সেই অর্ডারের কাজ নামিয়ে দেওয়ার কাজ চলছে জোর কদমে।
জানা গেছে একটা সময় জলপাইগুড়ি শহর এবং শহরতলি এলাকায় প্রায় ৫ টির মতো ট্রাঙ্ক তৈরির কারখানা ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই চাহিদা কমে। যাওয়ায় ৫ টি কারখানার মধ্যে কোনটি বন্ধ হয়ে গেছে কোনটি আবার চাহিদার অভাবে ধুঁকছে বলে জানান পান্ডাপাড়া কালিবাড়ি চেকপোস্ট এলাকার কারখানার মালিক প্রান্তষ বনিক। তিনি বলেন জি আই শিটের দাম বেড়েছে। এর ওপরে কর্মীদের বেতন, সব মিলিয়ে ট্রাঙ্ক বিক্রি করে লাভ থাকেনা বলেই চলে। তার ওপরে সাধারণ মানুষের মধ্যে ট্রাঙ্কারের প্রচলন আর আগের মতো নেই। সারা বছর এক দুই বার সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর থেকে অর্ডার আসাতে আমরা কিছুটা খেয়ে পরে বেঁচে আছি। তবে নির্বাচন এলেই চাহিদা বাড়ে। আর এই নির্বাচনের দিকেই তাকিয়ে থাকি।
কারখানার কর্মীরা জানালেন বছরের অন্যান্য সময় প্রতিমাসে ১০০ থেকে ২০০ ট্রাঙ্ক তারা তৈরি করেন। এছাড়া বিয়ের মরসুমে কিছুটা বেশী হয়। সেই দিক থেকে বলতে গেলে গ্রামীন এলাকার বিয়েতে ট্রাঙ্কের চাহিদার ওপরেই তাদের সংসার সারা বছর অনেকটাই নির্ভর করে। কারখানার একধারে বসে জি আই শিট পিটিয়ে সোজা করার কাজ করছিলেন ভবতোষ ব্যপারি। খোঁজ নিয়ে জানা গেলো এই বেক্তি এই কারখানার সবথেকে পুরোন কর্মী। তিনি জানান কাজ অনেকটাই কমেছে। তবে ডাল ভাত চলছে। নির্বাচনের সরকারি এসেছে সেই কাজের জন্য ব্যবস্ততা রয়েছে। আগে সপ্তাহে ইনকাম কম হতো এখন আড়াই হাজার হচ্ছে। যদিও এটা সরকারি অর্ডারের কারণে বলে তিনি জানান।
No comments:
Post a Comment