'কৃষি বাঁচাও গণতন্ত্র বাঁচাও দিবস' পালন; রাজভবনে ও জেলায় জেলায় কৃষকদের প্রতিবাদ ধর্না অবস্থান কর্মসূচী
কোলকাতা, ২৬জুন, ২০২১: সংযুক্ত কৃষক মোর্চা (এস কে এম) ও অখিল ভারতীয় কৃষক সংঘর্ষ সমন্বয় সমিতি’র (এ আই কে এস সি সি) ডাকে, বর্তমান কৃষক আন্দোলনের সাত মাস পূর্তি ও দেশে জরুরী অবস্থার ৪৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে, আজ কোলকাতা সহ বিভিন্ন জেলা সদরে ও ব্লকে পালিত হল “কৃষি বাঁচাও গণতন্ত্র বাঁচাও দিবস”।
মোদী সরকারের আনা কৃষি আইন ও বিদ্যুৎ (সংশোধনী) বিল ২০২০ প্রত্যাহারের দাবিতে এবং মোদী সরকারের আমলে দেশে যে অঘোষিত জরুরী অবস্থার মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তার বিরুদ্ধে এই কর্মসূচীর ডাক দেওয়া হয়েছিল বলে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
কোলকাতায় রাজভবনে ও বিভিন্ন জেলা সদরে ও ব্লকে ব্লকে ধর্না অবস্থান কর্মসূচী চালানো হয়। কৃষি আইন ও বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল বাতিল করার জন্য এবং দেশের গণন্তান্ত্রিক ব্যবস্থাকে রক্ষা করার উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে স্মারকলিপি জেলা/ব্লক আধিকারিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এ আই কে এস সি সি এবং এস কে এমের শরিক সংগঠন গুলি রাজভবনের সামনে ধর্না অবস্থান কর্মসূচী পালন করে। বিভিন্ন জেলার কৃষক ও কৃষক সংগঠনের নেতৃত্ব সমবেত হয়। অমল হালদার, কার্তিক পাল, সমীর পুততুন্ড, হরিপদ বিশ্বাস, হাফিজ সইরানি, প্রদীপ সিংহ ঠাকুর, সুশান্ত ঝা, পঞ্চানন প্রধান, সুভাষ নস্কর, কল্যাণ সেনগুপ্ত, প্রবীর মিশ্র ও অন্যান্য নেতৃত্ব বক্তব্য রাখেন।
তাঁরা বলেন কৃষকদের সাথে পরামর্শ না করে একতরফা কৃষক স্বার্থ বিরোধী ও বৃহৎ জাতীয় ও বহুজাতীয় কর্পোরেট স্বার্থ পরিপন্থী তিন কালা কৃষি আইন ও বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল এনে কেন্দ্র সরকার দেশের সমগ্র কৃষি বিপণন ও অত্যাবশ্যক পণ্য মজুত ও সরবরাহ ব্যবস্থাকে একচেটিয়া পুঁজিপতি ও বড় কর্পোরেটের হাতে তুলে দিতে চাইছে। কৃষকদের গোলাম বানাবার উদ্দেশ্যে চুক্তি চাষকে আইনি স্বীকৃতি দিতে চাইছে সরকার। এই সব আইনের ফলে ধ্বংস হয়ে যাবে দেশের কৃষি ব্যবস্থা, বেড়ে যাবে কালবাজারী, বাড়বে বেকারী। সীমাহীন মূল্যবৃদ্ধি হবে। দেশের গরীব ও সাধারণ মানুষের দুর্দশার শেষ থাকবেনা। তারা আর বলেন দেশের সংসদীয় রীতিনীতির তোয়াক্কা না করে, গায়ের জোরে সংসদে এই সব আইন পাশ করিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এর বিরুদ্ধে সারা দেশের কৃষক সমাজ দিল্লীর সীমান্তে দীর্ঘ সাত মাস ধরে রাস্তায় পড়ে থেকে লাগাতার ধর্না আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আজ এই আন্দোলন এক ঐতিহাসিক আন্দোলনে পর্যবসিত হয়েছে। আন্দোলনের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন দেশের শ্রমিক, যুব, মহিলা, বিদ্বজন–বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষ। গণতান্ত্রিক উপায়ে এই আন্দোলনের সমাধানের পথে না গিয়ে অগনতান্ত্রিক পথে ও গায়ের জোরে এই আন্দোলন ধ্বংস করতে চাইছে মোদী সরকার। আন্দোলনকারী ও সমর্থকদের গ্রেপ্তার করে, সামাজিক মাধ্যমগুলিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ও আর নানান ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। এক্ষেত্রেও আইন কানুন রীতিনীতি মানা হচ্ছেনা। বাদ যাচ্ছেন না মোদী সরকারের সমালোচনাকারী দেশের বিদ্বজন ও বুদ্ধিজীবী সমাজও। আন্দোলনকারী ও সমর্থকদের দেশদ্রোহী, খালিস্তানি, করোনা সুপার স্প্রেডার ইত্যাদি অপবাদের তকমা লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে দেশে অঘোষিত জরূরী অবস্থার পরিস্থিতি।
যতদিন না কৃষকদের দাবি সম্পূর্ণ পূরণ হবে, আন্দোলন লাগাতার চলবে বলে তাঁরা জানান। সংবিধানের প্রধান রক্ষক রাস্ট্রপতিকে দলমতের উর্ধে উঠে আজ সংবিধানকে রক্ষা করতে হবে; তাই রাস্ট্রপতিকে আজ সারা দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ স্মারকলিপি পাঠায়।
No comments:
Post a Comment