বন্ধ বিদ্যালয়- ছাত্র ছাত্রীরা নিজেদেরকে তুলে ধরেছে তাদের শ্রেষ্ঠ প্রতিভার মাধ্যমে
নিজস্ব প্রতিনিধি: আসানসোল: করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘ এক বছরেরও অধিক সময়ে দেশে সমস্ত বিদ্যালয় যেমন বন্ধ ঠিক তেমনই এই মহামারীর কারণে বহু ছাত্র ছাত্রীরা পড়াশোনা ছাড়াও নিজেদেরকে নিজেদের প্রতিভার মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে বা করছে। আর এই পরিস্তিতিতে প্রতিভা থাকা ছাত্র ছাত্রীরা নিজেদেরকে তুলে ধরেছে তাদের শ্রেষ্ঠ প্রতিভার মাধ্যমে।
আর অনেক জায়গায় দেখা যায় প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও নিজেকে ঠিক মতো প্রমাণ করতে পারে না, তাতে অভাব হোক বা অন্য কোনো নিষেধাজ্ঞা। অথবা পরিস্থিতির চাপ আর সেই পরিস্থিতির তাড়নায় অজান্তেই মিলিন হয়ে যাচ্ছে সমাজের বহু প্রতিভা ও প্রতিভাধর ছাত্র ছাত্রী। কিন্তু এবার পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল শিল্পাঞ্চলের এক ছাত্রী তার নিজের লেখা দু খানা বই প্রকাশ করে চমকে দিয়েছে সমগ্র শিল্পাঞ্চল বাসী তথা সমাজকে। বই প্রকাশ করে অন্যান্য ছাত্র ছাত্রীকে এক বার্তাও দিয়েছে শিল্পাঞ্চলের অঙ্কিতা চ্যাটার্জী। করোনার পর থেকে স্কুল কলেজ সব বন্ধ আর সেই সুযোগে শুরু করে উপন্যাস লেখা। অঙ্কিতার প্রথম উপন্যাস সোলমেট, নোশন প্রেস পাবলিকেশন ও প্রকাশ রায় এর সহযোগিতাই বের হয় আর দ্বিতীয় উপন্যাস অর্ধাঙ্গিনী পেন্সিল পাবলিকেশন ও ঋষভ ব্যানার্জী ও সমীর সরকারের সহযোগিতাই।এমনি এক ঘটনার সাক্ষী থাকলো আসানসোল শিল্পাঞ্চলের মানুষ।
একসময় যে মেয়েটা অন্যের লেখা উপন্যাস পড়তো আজ তার উপন্যাস শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয় সারা ভারতবর্ষের বিভিন্ন মানুষ কিনছে। আজ অর্ধাঙ্গিনী উপন্যাস সাধারণত পরিবারের কাছে এক বার্তা নিয়ে এসেছে যে টাকা পয়সার উর্ধেও স্বামীস্ত্রীর এক বন্ধন থাকে।সেই প্রতিভাবান ছোট্ট মেয়েটি বিধানচন্দ্র কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী হল অঙ্কিতা চ্যাটার্জী। এই শহরেই বাসিন্দা তিনি। ছোট থেকেই লেখালেখির প্রতি বিশেষ আকৃষ্ট ছিলো অঙ্কিতা, আর সেখান থেকেই পরবর্তী কালে আসানসোল শহরের বুকে ভালো লেখিকাও হয়েও ওঠে সে।
তার লেখা প্রথম উপন্যাস সোলমেট। সোলমেটের সারমর্ম, ভালোবাসা কি শুধু মানুষের জন্য ই ? কোনো ভ্যাম্পায়ার কি ভালোবাসতে পারে না ? জীবনে একবার ভালোবাসার পরও তো ভালোবাসা হয়, হতে পারে।। বিগত কয়েক শো বছর যে নিজের ভালোবাসার মানুষকে মনে করে শুধু চোখের জল বিসর্জন করে, তার জন্য হিংস্র হতে পারে, সেই কিন্তু কোনো একজনের জন্য পুনরায় হাসতে পারে, তার খুশিতে আনন্দিত ও তার দুঃখে কষ্ট পেতে পারে।।
হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও একজনকে ভালোবেসে পুনরায় হৃদস্পন্দন হতে পারে।। দ্বিতীয়বার ভালোবাসার পরও ভ্যাম্পায়ার হওয়া সত্ত্বেও বাঁচার আশা করতে পারে।। সেই ভালোবাসার মানুষটা একদিকে আর বাকি পুরো পৃথিবী একদিকে রাখতে পারে।।
আকাশ একজন ভ্যাম্পায়ার যে তার শত শত বছর আগের একটা প্রতিশোধের জন্য অপেক্ষা করছে কিন্তু ঘটনা চক্রে সেই ভ্যাম্পায়ার একজন মানুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।। একজনকে ভালোবাসে কিন্তু বিয়ে হলো অন্যজনের সাথে, আকাশ কোথাও না কোথাও তার নিজের নববধূকে কষ্ট দেওয়ার জন্য অনেক পথ খুঁজে বের করে কিন্তু তার চোখের জল দেখেই আর সেটা করতে পারে না, তার চোখের জল দেখে আকাশের নিজের বেশি কষ্ট হয়, তাহলে সে নিজের নববধূকে কষ্ট দেবে কি করে ? সেটা তো হয়ই না কিন্তু তাও ও চেষ্টা বন্ধ করে না।। এতোকিছুর পরও আকাশ তার নববধূকে ভালোবেসে ফেলে, একজন ভ্যাম্পায়ার হওয়া সত্ত্বেও সে তাকে ভালোবেসে ফেলে।।
উপন্যাস- সোলমেট ( প্রথম খন্ড )
লেখিকা- অঙ্কিতা চ্যাটার্জী
আর দ্বিতীয় অর্ধাঙ্গিনী। যার সারমর্ম হলো, অর্ধাঙ্গিনী শুধু নামেই না মানেও হতে হয়। স্বামীর সুখ দুঃখতে যেমন করে অর্ধাঙ্গিনী পাশে থাকেন ঠিক সেভাবে অর্ধাঙ্গও স্ত্রীর সুখ দুঃখতে পাশে থাকেন।
বিয়ের মতো সম্পর্কর ওপরও বিশ্বাস না থাকার পর, নিজের অর্ধাঙ্গিনীকে নিজে সম্মান না দিলেও কারো সামনে অসম্মান না করা, ছোটো না করা সেটা সবাই করে থাকেন না। বিয়ে নামক সম্পর্কে জড়াতে না চাওয়ার পরও জড়িয়ে পড়ে অর্ধাঙ্গিনীর জন্য আপনাআপনি হৃদয়ে স্থান তৈরি হওয়া এবং অর্ধাঙ্গর খারাপ সময়েও তার হাতে হাত রেখে পাশে থাকা। অর্ধাঙ্গ ও অর্ধাঙ্গিনীর মধ্যেকার বন্ধন, সর্বদা একে অপরের পাশে থাকার এবং এক দম্পত্তির প্রেম কাহিনী 'অর্ধাঙ্গিনী'।
উপন্যাস- অর্ধাঙ্গিনী
লেখিকা- অঙ্কিতা চ্যাটার্জী
অর্ধাঙ্গিনী লেখার পরই সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে আসানসোল শিল্পাঞ্চলের পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে।
No comments:
Post a Comment