বাবা অসুস্থ, বাঁচার রসদ খুঁজতে সপ্তম শ্রেণিতেই রসগোল্লার ফেরিওয়ালা বর্ধমানের সুমন
অর্ণব কাঁড়ার, বর্ধমানঃ
ভাঙা সাইকেলের পিছনে বাঁধা ক্রেট। তাতে রাখা মণ্ডা-সন্দেশ-দই। সেই সাইকেল নিয়ে গ্রাম ঘুরে মিষ্টি বিক্রি করছে বছর তেরোর এক কিশোর। লকডাউনের সময় থেকে এই ছবি দেখা যাচ্ছে বর্ধমান ২ ব্লকের নবস্থা ২ পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রামে। বাড়িতে বাবা অসুস্থ। তাই সংসারের হাল ধরতে পড়াশোনার ফাঁকে মিষ্টি বিক্রি করছে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সুমন ঘোষ।
মেমারির খাঁড়গ্রামে বাড়ি সুমনের। স্থানীয় জুনিয়র হাইস্কুলে পড়ে। বাড়িতে বাবা-মা ছাড়াও, রয়েছে বছর তিনেকের বোন। বাবা শরৎবাবু অ্যাম্বুল্যান্স চালাতেন। পরিবার সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ তাঁর ডায়াবিটিস ধরা পড়ে। তার পরে, শরীরে নানা রোগ বাসা বাঁধায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। সুমনের মা নয়নমণিদেবী জানান, সেই সময়ে ছেলে তাঁদের বাড়িতে মিষ্টি তৈরি করতে বলে। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলেই সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে। আমাদের তৈরি করা মিষ্টি গ্রামে-গ্রামে বিক্রি করে।’’
ইটের গাঁথনির অ্যাসবেস্টসের চালের ঘরের পাশে ছোট জায়গায় দম্পতি তৈরি করেন মণ্ডা, সন্দেশ ও দই। ভাঙা সাইকেলে সকাল-বিকেল তা খাঁড়গ্রাম, করন্দা, ভৈটা, বেগুট, পালশিট গ্রামে বিক্রি করে সুমন। কোনও গ্রামে কোনও অনুষ্ঠান, মেলা বা খেলার আসর রয়েছে কি না, আগে থেকে খবর নিয়ে পৌঁছে যায় সেখানে। সুমন জানায়, দিনে গড়ে ৫০০-৬০০ টাকার বিক্রি হয়।
পরিবার জানায়, করোনা-পরিস্থিতির জন্য স্কুলে গিয়ে পঠনপাঠন এখন বন্ধ রয়েছে। মিষ্টি বিক্রি করতে বেরোনোর আগে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যায় সুমন। কাজ সেরে ফিরে, আবার পড়তে বসে বাবার কাছে। সুমনের কথায়, ‘‘রেশনে, মিড-ডে মিল থেকে চাল-আলু পাওয়া যায়। কিন্তু বাবার ওষুধ কেনা, পড়ার খরচ, সংসারের আরও নানা খরচের জন্যই সাইকেলে করে মিষ্টি বিক্রি করি।’’ শরৎবাবু বলেন, ‘‘ছেলের বুদ্ধি আছে। ইচ্ছে ছিল, ওকে শিক্ষিত করব। কিন্তু আমার এই অবস্থার জন্য সংসার চালাতে ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে!’’ খাঁড়গ্রাম জুনিয়র হাইস্কুল সূত্রে জানা যায়, গত বছর টাকার অভাবে সুমনকে ভর্তি করতে পারেনি পরিবার। স্কুলের তরফেই ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়।
প্রীতম (ডাকনাম সুমন)..
Account Details:
Bank Of India
Name: PRITAM GHOSH
Ac no: 426718210002552
IFSC: BKID0004267
দেখা করতে হলে -বর্ধমান থেকে পালসিট .পালসিট থেকে উত্তর দিকে একটা রাস্তা যাচ্ছে সেখান থেকে 3 কিলোমিটার খাঁড়গ্রাম. জিজ্ঞেস করে চলে যাবেন, ছেলেটির বাবার নাম শরৎ ঘোষ....
বাচ্চা ছেলেটির বাবার ফোন নম্বর: 9609606171 (শরৎ ঘোষ)
No comments:
Post a Comment