Latest Bengali News Portal

Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

Thursday, March 11, 2021

‘কচি হাতে লেখা’ ও ‘কোচ-রাভা রচিত’: প্রাসঙ্গিকতা

‘কচি হাতে লেখা’ ও ‘কোচ-রাভা রচিত’: প্রাসঙ্গিকতা




-ড. শান্তনু পাণ্ডা
নৃ-তত্ত্বের শিক্ষক, গবেষক ও প্রাবন্ধিক



বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারীর আতঙ্কে মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত। ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে আজ অবধি পৃথিবী ভালো নেই, ভালো নেই আমরা। এজন্য বাঁচার তাগিদে মানুষকে প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হচ্ছে। মানুষের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ভাষা-চর্চার ঘাটতি যাতে না ঘটে সেইদিকে দিকে লক্ষ্য রেখে কিছু সৃজনশীল ব্যক্তিত্ব অবিরত কাজ করে চলেছেন। এমনি একটি জলজ্যান্ত উদাহরণ উত্তর চব্বিশ পরগণার গাইঘাটা ব্লকের ‘অনলাইন টিচিং’ নামক সংস্থাটি। যার কর্ণধর ড. অরূপ মজুমদার- শিক্ষক ও নৃ-তাত্ত্বিক, শিক্ষাবিজ্ঞান ও ভাষাবিজ্ঞানের গবেষক হিসেবে যিনি বিদ্বতসমাজে পরিচিতি লাভ করেছেন।


এই পরিস্থিতিতে তিনি ও তাঁর সহকারী শিক্ষক শিক্ষিকারা ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে তাদেরকে বাড়িতে বসিয়েই পড়াশুনা ও শিল্পসংস্কৃতিতে উদবুদ্ধ করার জন্য পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ-কবিতা নিয়ে একটি বই সম্পাদনা করেন; নাম-‘কচি হাতে লেখা’। বইটির কথামুখ লিখেছেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ও নাট্য পরিচালক দেবেশ চট্টোপাধ্যায়। বইটিতে যেমন রয়েছে জয়া দাসের ‘চিনির বদলে নুন’ কবিতা তেমনি সায়নদীপ পাণ্ডার প্রবন্ধ ‘অতিমারী করোনা ও মানুষের জীবনযাত্রা’, আবার শুভম গাইনের ‘শেয়াল ও বুড়ির গল্প’। বইটির বিষয়বস্তু ছাত্র ছাত্রীদের চিন্তনকে এবং তাদের লেখনীকে বিকাশ ঘটাবে এবিষয়ে দ্বিমত থাকার কথা নয়। এমনকি বইটির প্রভাবে শিক্ষক ও অভিভাবকদের শিশুদের প্রতি অবহেলা অবমাননার বিনাশ ঘটাবেও বলে আমার মনে হয়।

এবার আসি ড. অরূপ মজুমদার, ড. অমৃতা দাস ও ড. সঞ্জীবন মণ্ডল সম্পাদিত ‘কোচ-রাভা রচিত’ বইটির কথায়। বইটি ১৫০ পাতা সমৃদ্ধ; বাংলা-ইংরেজি-কোচ-অসমীয়া ও হিন্দি ভাষার লেখা রয়েছে। ২১ শে ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে প্রকাশিত। প্রকাশনা করেছেন ‘অনলাইন টিচিং’ সংস্থা। বইটির প্রাককথন লিখেছেন অধ্যাপক সমর বিশ্বাস, নৃ-তত্ত্ব বিভাগ, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। করোনাকালীন পরিস্থিতিতে নতুন কোন চিন্তাভাবনা থেকে বাংলা ভাষায় জনজাতিদের কথা তুলে ধরার উদ্দেশ্যে এই বইটির প্রকাশ। বইটির মূল্যবান কথা সম্পাদকীয় কলমে খুব সুন্দর ও প্রাঞ্জল ভাষায় ব্যক্ত হয়েছে। এই ‘রাভা’রা পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার জেলার বাসিন্দা। এদের আদিবাসস্থান পূর্ব-ভারত। যাইহোক যে সমস্ত গবেষক এই বইতে রাভাদের জীবনযাত্রা, ভাষা, সাহিত্য, আচার-অনুষ্ঠান, সঙ্গীত, গোত্র, পোশাক পরিচ্ছদ, উৎসব এর কথা তুলে ধরেছেন তার মাত্রা অন্যরকম। এই জনজাতি পশ্চিমবঙ্গে খুব কম সংখ্যায় হলেও তাদের নিজস্বতার চিত্র এই বইতে প্রস্ফুটিত। বইটি শিক্ষক ছাত্র ও গবেষকদের পকেট ‘বুক’ হবে বলে মনে করি।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Your Ad Spot

Pages