আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস উপলক্ষে অকপটে সত্য তুলে ধরলেন গায়িকা সৌমিতা সাহা
সম্মিলিত রাষ্ট্রসংঘের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৯৪ সাল থেকে ১৫ই মে, আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস হিসাবে উদযাপন করা হয়। পরিবার সকলের কাছেই একটা আবেগের জায়গা। ভারতে যৌথ পরিবার আবেগ ছাড়াও এক অদ্ভুত গৌরবের বিষয়। এই আবেগ আর গৌরব আমরা এক যে ছিল রাজার আমল থেকে টানতে টানতে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে এসেছি, যেখানে আত্মীয়তা ও ভালো সম্পর্ক কে ছাপিয়ে বিরাজমান prestige issue। যেন যৌথ থাকা মানেই adjustment এর ধারক বাহক হয়ে যাওয়া, আর বিছিন্ন হয়ে ভালো থাকার মধ্যে লুকিয়ে আছে স্বার্থপরতা।
আসলে সম্পর্কে যদি টান থাকে যৌথ পরিবার ও যেমন ভালো তেমনি আলাদা থাকা ছোট্ট পরিবার ও সুন্দর। আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস নিয়ে অকপট মুখ খুললেন গায়িকা সৌমিতা সাহা। সৌমিতা একজন সফল প্লে-ব্যাক গায়িকা হওয়ার পাশাপাশি একজন আন্তর্জাতিক মানের চিত্রকর।
দক্ষিণ কলকাতা নিবাসী সৌমিতা বসবাস করেন পৈতৃক বাড়িতেই। দাদুর ছিল পরিধানের ব্যাবসা, দাদুর ও তার ভাই ব্যাবসা পৃথক করলেও বসবাস করেন একই মহল্লায়। শরিকি ঝামেলা পোহাতে হলেও ওই ঐক্যের জয়গান গাওয়া বন্ধ হয়নি কখনও। সৌমিতা সঙ্গীতজ্ঞ স্বপন সাহা ও কৃটিক্ মধুমিতা সাহার একমাত্র কন্যা। বাবা মা সকলকে সম্মান করতে শেখালে অবাধ্য হয়নি সৌমিতা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি।
গত বছর জনতা কারফিউ জারি হলে সৌমিতা আটকে পরেন ভিন্ন শহরে, বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ার পর ফিরে আসেন বাড়ি। বাড়ি ফিরে পরেন চরম বিপদে। কোভিড সঙ্ক্রামিত অপবাদে তাকে এক ঘরে করার দাবি জানান শরিকরা, নেগেটিভ টেস্ট রিপোর্ট দেখালে বাড়ে বিপত্তি। শরিকদের ' ইগো ' আহত হলে, সৌমিতার বাবা মা কে অকথ্য গালাগালি শুনতে হয়। মানসিক নির্যাতনের কবলে পরে অবশেষে নিতে হয় প্রশাসনের সহায়তা।
সৌমিতা স্থাপত্য বিদ্যা নিয়ে স্নাতক হন। ইন্ডাসট্রি তে যাত্রা শুরু করেন ইভিএমের হাত ধরে। তারপর রবি ঠাকুরের গান ও প্লেব্যাক, আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি সৌমিতা সাহাকে। এই অশান্তি ও আইনি ঝামেলা বিষয়ে সৌমিতা বলেন " কোভিড অতিমারীর দূরত্ব বিধিকে ঢাল করে মানুষ অমানবিকতার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়ে উঠেছে। আর ব্যাক্তিগত আক্রোশ মেটানোর কাজে কোরোনা কে খারাপ ভাবে ব্যাবহার করা হচ্ছে।"
সোস্যাল মিডিয়ায় আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস সম্পর্কে লিখতে গিয়ে সৌমিতা সামনে আনেন এই সত্য। সৌমিতার বেদনা দায়ক লেখা ছুঁয়ে যায় নেটাগরিকদের হৃদয়। তিনি অবশেষে আরও লেখেন " সম্পর্ক রক্তের হোক আর নাই হোক, সম্পর্কে আবদ্ধ মানুষ গুলোর কষ্টে যদি অন্তরে রক্তক্ষরণ নাই হল... তবে ওটা নিছক সামাজিকতা , আত্মার আত্মীয়তা নয়।"
No comments:
Post a Comment