Latest Bengali News Portal

Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

Sunday, May 9, 2021

সম্পাদকীয়: আপামর বাঙালীর মননে বিরাজমান রবীন্দ্রনাথ

সম্পাদকীয়: আপামর বাঙালীর মননে বিরাজমান রবীন্দ্রনাথ



আরিফ হোসেন, মুখ্য সম্পাদক, সংবাদ একলব্যঃ 


ধন‍্য বাঙালি। সাহিত‍্য-সংস্কৃতির ছাঁয়ায় বাঙালি বাঁচে। আর সেই সাহিত‍্য সাধনায় বিশ্ব দরবারে খ‍্যাত নোবেলজয়ী প্রথম এশিয় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১লা বৈশাখ নববর্ষের পর বাঙালির উৎসব ২৫শে বৈশাখ রবীন্দ্র জয়ন্তীতে। বাংলার মানুষের মননে বিরাজমান রবীন্দ্রনাথের গান, রবীন্দ্রনাথের কবিতা, রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি। যা বুকে রেখে বেঁচে থাকে বাঙালি।



আজ ২৫ বৈশাখ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন। কলকাতার জোড়াশাকোর ঠাকুর পরিবারে ১২৬৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বিশ্বসাহিত্যের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিভা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা তথা সারা ভারতের সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশ-প্রসারে অসামান‍্য অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে ছিলেন, আছেন ও থাকবেন। সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনেও ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি।



কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীত রচয়িতা-সুরকার, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, সংগীতশিল্পী ও দার্শনিক রবীন্দ্রনাথের লেখনী নতুন পথের দিশা দেখিয়েছেন। দেখিয়েছে নতুন দিগন্ত। আজও রবীন্দ্রনাথ বাংলা সংস্কৃতি জুড়ে বিরাজমান। আজও তাঁর লেখনী উদ্বুদ্ধ করে তোলে সমাজকে। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী রবীন্দ্রনাথ কবি পরিচিতিই বিশ্ববরেণ্য করে তুলেছিল 'বিশ্বকবি' বা 'কবিগুরু' নামে। রবীন্দ্রনাথের লেখা ইংরেজি, ডাচ, জার্মান, স্প্যানিশসহ বেশ কিছু ইউরোপীয় ভাষায় অনুদিত হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'গীতাঞ্জলী' কাব্যগ্রন্থ ইংরাজীতে অনুবাদ হয়েছিল আর সেই কাব্যগ্রন্থের জন্য নোবেল পুরষ্কার পান তিনি। তিনিই ছিলেন প্রথম এশিয় যিনি নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত হন। নাইট উপাধিও পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তৎকালীন সময়ে জানিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকান্ডের জেরে সেই উপাধি ত্যাগ করেন তিনি। 


রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পরেও আজ এই মহামারীর সময়ে ভরসা জুগিয়েছে তাঁর লেখা। তাঁর লেখায় ফুটে উঠেছে মহামারীর বহু কথা। কবিতার মধ্যে মানবহৃদয়ের বিষণ্ণতা, প্রেম ও সৌন্দর্য সম্পর্কিত রোম্যান্টিক ভাবনা কিংবা রবীন্দ্রনাথের আধ্যাত্মিক চিন্তা, নারীজীবনের সমসাময়িক সমস্যাগুলি তুলে ধরেছেন তিনি। প্রাচীন সাহিত্যের দুরূহতার পরিবর্তে তিনি এক সহজ ও সরস কাব্যরচনার আঙ্গিক গ্রহণ করেছিলেন।  তাঁর হাতেই বাংলা প্রবন্ধ ও রচনা সাহিত্যের বিপুল প্রসার। তিনি বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় অসংখ্য প্রবন্ধ রচনা করেছিলেন। সঙ্গীতেও তিনি ছিলেন আগ্রহী। গবেষকরা মনে করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানই তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। 


তাঁর লেখনীর বহু লাইন মানব সমাজকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে উচ্চ শিরে বেঁচে থাকতে ভরসা যোগায়। এক কথায় শিক্ষা থেকে সংস্কৃতি, সমাজ থেকে জীবন সর্বত্র রবীন্দ্রনাথ আজও বিরাজমান। হিন্দু ও মুসলমানদের সম্প্রীতি রক্ষায় 'রাখী বন্ধন' উৎসব রবীন্দ্রনাথের হাত ধরেই আরম্ভ হয়েছে। প্রকৃতির উন্মুক্ত পাঠে শিশুদের সামিল করার লক্ষ্যে বিশ্বকবি শান্তিনিকেতনে গড়ে তোলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়।


'' আজই হতে শতবর্ষ পরে 
কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতখানি
কৌতূহলভরে- ..." 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ''১৪০০ সাল'' কবিতার সেই পঙক্তি আজও বাস্তব। তাঁর কবিতার প্রতিটি লাইন আজও কতটা জীবিত তা উপরের এই কবিতা থেকেই প্রমানিত। রবীন্দ্রনাথ বাঙালির প্রাণের ঠাকুর ছিল, আছে, থাকবে। আজ ১৬০ তম জন্মদিনেও তাঁর সৃষ্টির মধ্য দিয়েই তিনি জীবিত। হারে হারে তাঁর সৃষ্টির অনুভূতি মানব জীবনকে অতিবাহিত করে নিয়ে যাচ্ছে। 

” ভালোবাসা অর্থে আত্মসমর্পণ করা নহে , ভালোবাসা অর্থে ভাল বাসা , অর্থাৎ অন্যকে ভালো বাসস্থান দেওয়া, অন্যকে মনের সর্ব্বাপেক্ষা ভালো জায়গায় স্থাপন করা । ” - রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর। 

“মনুষ্যত্বের শিক্ষাটাই চরম শিক্ষা আর সমস্তই তার অধীন।”- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। 

“কাব্যরস আস্বাদনে পাঠকদের অত্যন্ত বেশি যত্নে পথ দেখিয়ে চলা স্বাস্থ্যকর নহে। নিজে নিজে সন্ধান করা ও আবিষ্কার করা সত্যকার আনন্দ।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Your Ad Spot

Pages