বাঁকুড়ার শিল্পীর পাশে গোপীবল্লভপুরের শিক্ষক
শচীন পাল ঝাড়গ্রাম:-
বাঁকুড়া জেলার ইন্দপুর ব্লকের অন্তর্গত এক সংস্কৃতি সম্পন্ন গ্রাম হলো বগা l বাঁকুড়া শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত এই গ্রাম l এই গ্রামেরই বাসিন্দা তন্ময় মুকুটি l দক্ষিণবঙ্গের সংগীত জগতের আলোড়ন সৃষ্টিকারী নাম তন্ময় মুকুটি l খেয়াল, ভজন,লোকগীতি থেকে শুরু করে রবীন্দ্র সংগীত,আধুনিক ছায়াছবির গান সমস্ত ক্ষেত্রেই তার অবাধ বিচরন l বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ করার পর রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীতেও এমএ করেন এই প্রতিভাবান শিল্পী l চাকরির চেষ্টা করেও মেলেনি চাকরি l মঞ্চে সংগীত পরিবেশন এবং ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গীত শিখিয়ে অর্জিত অর্থেই মা,বাবা, স্ত্রী ও দুই শিশু কন্যা নিয়ে পরিবারের ছয় সদস্যের জীবনযাত্রা অতিবাহিত হয় l বর্তমানে এই পরিবারটি এক কঠিন বাস্তবের সম্মুখীন l কিছুদিন পূর্বে শারীরিক সমস্যা হওয়ায় চিকিৎসকদের কাছে যেয়ে জানতে পারেন তাঁর দুটি কিডনিই নস্ট হয়ে গেছে l
দক্ষিণ ভারতের এক নামি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিন মাসের মধ্যে একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করতেই হবে l না হলে চিরতরেই নিভে যেতে পারে উদীয়মান এই সঙ্গীত শিল্পীর জীবনদীপ l ছেলের জীবন দীপ কে প্রজ্বলিত করে রাখতে মা একটি কিডনি দিতে রাজি l কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য আনুষঙ্গিক বিপুল ব্যয় ভার বহন করা এই কর্ম হীন পরিবারটির পক্ষে সম্ভব নয় l ইতিমধ্যে কিছু হৃদয় বান মানুষ এবং কিছু স্বেচ্ছা সেবি সংস্থা পরিবারটির পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন l একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে পরিবারটির সাথে যোগাযোগ হয় হেরম্ব বাবুর l খবর পেয়ে পরিবারটির পাশে যেয়ে দাঁড়ান বাঁকুড়ার ভূমিপুত্র, বিশিষ্ট সমাজকর্মী তথা জঙ্গলমহল এলাকার মানবদরদী শিক্ষক হেরম্ব নাথ চক্রবর্তী l
শুক্রবার হেরম্ব বাবু,পরিবারটির বাড়িতে গিয়ে তন্ময় বাবুর চিকিৎসার জন্য দশ হাজার টাকা পরিবারটির হাতে তুলে দেন এবং আগামী দিনেও তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। উল্লেখ্য, হেরম্ব বাবুর বাড়ি বাঁকুড়া জেলার তালডাংরা থানার হাড়মাসড়া গ্রামে l বর্তমানে তিনি জঙ্গলমহল এলাকা হিসেবে পরিচিত ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর ১ নং ব্লকের অন্তর্গত নয়াবসান জনকল্যাণ বিদ্যাপীঠের সংস্কৃত বিষয়ের শিক্ষক l দীর্ঘ পনেরো বছরেরো কিছু বেশি সময় ধরে তিনি এই বিদ্যালয়ে শিক্ষাদান কার্যে যুক্ত আছেন l মানবদরদী শিক্ষকের এহেন মানবিক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ l
No comments:
Post a Comment