জঙ্গলে ঘেরা ধনুড়ি গ্রামের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিলো মাইথন এ্যলয় কারখানার কর্নধার
রামকৃষ্ণ চ্যাটার্জি, আসানসোল: সালানপুর ব্লকের দেন্দুয়া পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গ্রাম ধনুড়ি। যেটি মূলত জঙ্গলে ঘেরা আদিবাসী প্রধান একটি গ্রাম। আর সরকারি বহু সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে এই গ্রামের মানুষেরা। কারোরই নজর তেমন ভাবে পরনা এই গ্রামে। যদিও এই গ্রামেই সবুজ গাছপালায় ঘেরা ৪১ টি মাটির ঘড়ে বাস করে ৪১ টি পরিবার। সরকারি ইন্দিরাবাস কিংবা বাংলা আবাস যোজনা কিছু কিছু পরিবারের মিললেও বহু পরিবার রয়ে গেছে এখনো বঞ্চিত।
তবে কোরোনা মহামারীর এই দুঃসময়ে বর্তমান রাজ্য সরকারের উদ্যোগে পশ্চিম বর্ধমানের জেলা শাসক বিভু গােয়েল মহাশয়ের নির্দেশে জেলার বিভিন্ন ফেডারেশন অফ সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজর সাথে একটি বৈঠক করা হয়। আর সেই বৈঠকে জেলাশাসকের পক্ষ থেকে শিল্প সংস্থাগুলিকে এই জেলার আটটি ব্লকের পিছিয়ে পড়া গ্রামের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সহযােগিতা করার আবেদন জানানো হয়। আর সেই অনুসারে জেলাশাসকের আবেদনে সারা দিয়ে জামুড়িয়া চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ , রানীগঞ্জ চেম্বার অফ কমার্স এবং ফেডারেশন অফ সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এগিয়ে আসে।
যদিও এই জেলায় চব্বিশটি ব্যবসায়ী সংগঠন বর্তমানে সক্রিয় আছে। আর তারা যাতে সকলেই এগিয়ে আসেন সেই বিষয়েই আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন জেলাশাসক। আর তাই সেই আবেদনে সারা দিয়ে সালানপুর ব্লকের দেন্দুয়া পঞ্চায়েতে মাইথন ঘেঁষা এই বুধুডি গ্রামটির বিশেষ উন্নয়নের দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নিলেন অন্যতম প্রতিষ্ঠিত শিল্প সংস্থা মাইথন এ্যলয়ের কর্ণধার। তিনি এদিন জানান নিজেদের সিএসআর প্রকল্পের অর্থ থেকে ধনুডি গ্রামের সার্বিক উন্নয়নের কাজে লাগাবেন তিনি।
এদিকে বৃহস্পতিবার ১লা জুলাই মাইথন এ্যলয় কর্নধার সুভাষ আগরওয়াল নিজে বুধুডি গ্রাম এলাকা ঘুরে দেখেন। তিনি ছাড়াও তার সঙ্গে এদিন ছিলেন সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ফাল্গুনী কর্মকার ঘাসি, বিডিও অদিতি বসু, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মােঃ আরমান , সমিতির সহ - সভাপতি বিদ্যুৎ মিশ্র , দেলুয়া পঞ্চায়েতের প্রধান সিমুলা মারান্ডি , উপপ্রধান রঞ্জন দত্ত সহ প্রমুখ। এদিন তিনি ওই গ্রাম ঘুরে গ্রামের অবস্থার কথা দেখে। কথা বলেন গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে।
পরে তিনি জানান এই গ্রামে সাতটি স্ট্রিটলাইট বসানাে ছাড়াও, গ্রামের মধ্যে থাকা শিশু শিক্ষা কেন্দ্রটিকে পূর্ণ সংস্কার করা হবে। পাশাপাশি গ্রামে পানীয় জলের সমস্যা মেটানাের জন্য দুটি সাবমারসিবল টিউওয়েল বসানাে, স্কুলের সামনে সরকারি জমিতে শিশুদের খেলাধুলার জন্য একটি পার্ক তৈরি করে দেবার কথা বলেন তিনি।
এদিন মাইথন এ্যলয় কর্নধার সুভাষ বাবু ওই গ্রাম ঘুরে দেখার সময় দেখেন গ্রামের একটি নির্মীয়মান মন্দির অসম্পূর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে, এই দেখে তিনি সঙ্গে সঙ্গে মন্দিরটিকেও সুন্দর ভাবে তৈরি করে দেবার আশ্বাস দেন। এছাড়া ধনুডি গ্রামের পাশেই সরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা মাটির সৃষ্টি প্রকল্পকে আরো সুন্দর গড়ে তুলতে সরকারের সাথে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি ওই অঞ্চলে যত গাছ লাগানাের প্রয়ােজন হবে তা তার সংস্থা সেই গাছ লাগাবে বলেও জানান তিনি। এদিকে শিল্প সংস্থার এহেন উদ্যোগে প্রশাসনের সঙ্গে সঙ্গেই খুশি ওই এলাকার গ্রামবাসীরাও।
No comments:
Post a Comment