Latest Bengali News Portal

Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

Saturday, June 18, 2022

প্রকাশিত হল নীলাঞ্জন মিস্ত্রীর তিস্তাবাথান

প্রকাশিত হল নীলাঞ্জন মিস্ত্রীর তিস্তাবাথান


people with book



উৎপল বর্মন, জলপাইগুড়ি : কলকাতার ‘লা স্ত্রাদা’ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হল নীলাঞ্জন মিস্ত্রীর তথ্যানুসন্ধানী গ্রন্থ ‘তিস্তাবাথান’। লেখকের ক্ষেত্রসমীক্ষা ভিত্তিক সুনিপুণ লেখনীতে তিস্তাচরের জনজীবন, মৈষালবন্ধু ও বাথান সংস্কৃতির অতীত বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি উঠে এসেছে তিস্তাবাথান নামক আখ্যানের পাতায় পাতায়। 

সম্পূর্ণ ঘরোয়া পরিবেশে তিস্তা স্পারের পার্শ্ববর্তী তেজপাতা গাছে পরিপূর্ণ তিস্তাফোরে গ্রন্থের মোড়ক উম্মোচন করেন তিস্তাবঙ্গের দুই মৈষালবন্ধু সানিয়া মুর্মু ও আমির হোসেন। বাথান সংস্কৃতি অবলুপ্তির পথে বলে কাজ হারিয়ে আমির হোসেন বর্তমানে ভিন্ন পেশায় যুক্ত হলেও ‘বাথান বাথান করেন মৈষাল, ও মৈষাল বাথান করিলেন বাড়ি’ খালি গলায় পরিবেশন করে মৈষালদের ফেলে আসা দিনগুলিকে সামনে এনে বই প্রকাশ অনুষ্ঠানটিকে ভিন্নমাত্রা দান করেন। 

মিলি ভট্টাচার্যের কণ্ঠে ভেসে উঠে- ‘আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে’। যে আনন্দের বহিঃপ্রকাশ দেখা গেছে প্রকাশক সুমিতা সামন্ত’র আবেগময় বক্তব্যে- ‘একজন প্রকাশক কর্মী হিসেবে এতদিন যা চেয়েছি…আজ তার আরও একটা ধাপ এগোতে পারলাম। কলকাতার চেনা গণ্ডির বাইরে, যাঁদের নিয়ে এই কাজ তাঁদের হাত ধরেই প্রকাশিত হল ‘লা স্ত্রাদার’ নতুন বই তিস্তাবাথান’। তিস্তাবঙ্গের বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক উমেশ শর্মা মহাশয় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে উল্লেখ করেন- ‘নীলাঞ্জন নিজেই জানে না ও কত বড় কাজ করেছে’। 

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ও বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক রণজিৎ কুমার মিত্র উল্লেখ করেন- ‘বইটি সমকালের আশ্চর্য দলিল’। অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষারত্ন শিক্ষক অমিত কুমার দে অভিমত ব্যক্ত করেন যে- ‘আজকের পাঠক সমাজ ঠিক এমন লেখাই তো চাইছে। তিস্তাবাথান অমর হয়ে থাকবে বলে মনে করি’। 

কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সঞ্জীবকুমার রায় বইটির গুরত্ব ও বাস্তবতার পাশাপাশি তিস্তা অববাহিকার বাথান সংস্কৃতি অবলুপ্তির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং নীলাঞ্জন মিস্ত্রীর এই ব্যতিক্রমধর্মী কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিশিষ্ট সঞ্চালক সৌমিক চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত বইপ্রেমী, কবি-লেখকদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। তাই বই প্রকাশের দিনই মুদ্রিত সবগুলি কপিও নিঃশেষিত হয়েছে বলে প্রকাশকের থেকে জানা যায়।

লেখকের সর্বক্ষণের ছায়াসঙ্গী কৃষ্ণেন্দু দাস জানান যে তিস্তাচর থেকে হোগলা, কাশ, ঝাঁও ও বিভিন্ন ফুল সংগ্রহ করে ফুলের তোড়া বানিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়। তাই সমগ্র অনুষ্ঠানটিতে নতুনত্বের সমাহার ছিল ব্যতিক্রমধর্মী। 

পাশাপাশি কৃষ্ণেন্দুবাবু আরও উল্লেখ করেন যে, নীলাঞ্জনের তিস্তাবাথান নির্মাণে রাজু রায়, কল্যাণ বসাক, প্রশান্ত কার্জী, বিশ্বজিত চক্রবর্তীরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে পাশে ছিল। গ্রন্থ প্রকাশ অনুষ্ঠানেও তাঁদের উপস্থিতি সম্পর্কগুলির দীর্ঘসূত্রতাকেই বহন করবে। ব্যস্ততার কারণে তিস্তাবাথানের সর্বক্ষণের সঙ্গী ড.সঞ্জীবন মণ্ডল উপস্থিত হতে না পারলেও অনলাইনের মাধ্যমে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বয়সজনিত কারণে বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও গবেষক ড. বিমলেন্দু মজুমদার উপস্থিত থাকতে না পারলেও তিস্তাবাথান ও অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করে মুঠোফোনে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন। 

আন্তর্জাতিক চিত্রপরিচালক দেবলীনা মজুমদার অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কোন বক্তব্য না রাখলেও সবুজের সমারোহে সর্বক্ষণ ক্যামেরা সচল রেখেছেন এবং গ্রন্থপ্রকাশ অনুষ্ঠানকে বহুদূর পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন।

লেখক নীলাঞ্জন মিস্ত্রী সপরিবারে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে প্রকাশক, আমন্ত্রিত ব্যক্তিবর্গ ও বইপ্রেমীদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সেইসাথে তিনি আরও উল্লেখ করেন যে ‘সানিয়া মুর্মু, আমির হোসেনদের মতো প্রান্তিক ব্যক্তিদের হাতে তিস্তাবাথান উদ্বোধন হওয়ায় তিনি গর্বিত’ ।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Your Ad Spot

Pages