ভুট্টা বিক্রি করেই দিন কাটছে ষাটোর্ধ দম্পতির, সরকারি ঘরের করুন আর্তি
দক্ষিণ দিনাজপুর:
ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। আর এই জেলার সদর শহর বালুরঘাট। যা সংস্কৃতির শহর নামেও পরিচিত। শহরের বিশ্বাসপাড়া এলাকায় ব্যাস্ত রাস্তার ধারে করোনা মহামারীর কারণে প্রথম লকডাউনের জেরে আর্থিক কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে ও সংসারের হাল ধরতে ষাটঊর্ধ নৃপেন মহন্ত ও তার স্ত্রী অনিতা মহন্ত রোজ বিকেল থেকে রাত অবধি কঠোর পরিশ্রম করে তাঁদের একটি নিজস্ব ভ্যানে ভুট্টা বিক্রি করছেন, যা দিয়ে দিন গুজরান হচ্ছে এই মহন্ত দম্পতির। উল্লেখ্য, বালুরঘাট ভাটপাড়া ৫ নং পঞ্চায়েতের বঙ্গী বৈদ্যনাথ পাড়া একরত্তি ঘরে বসবাস করেন তারা। ঝড় জল বৃষ্টি এলে ঘর বাঁচাতে নিদ্রাহীন হয়ে থাকেন এই মহন্ত দম্পতি। ঘরের চাল আর অন্যান্য জায়গার অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে, বৃষ্টি আর শীতের সময় কষ্টে থাকতে হয়। ঘরে জল পরে বর্ষায় আর শীতে হুহু বাতাসে ঠকঠক হাড় কাপে এই দম্পতির। অভিযোগ বারংবার ঘরের জন্য আবেদন করলেও ঘর জোটেনি তাঁদের ভাগ্যে মায় উল্টে আরও বেড়েছে কষ্ট। এছাড়াও বহুবার আবেদন করেও এখনো অবধি পাননি বৃদ্ধ ভাতা। জানা গেছে, ছেলে মেয়েরা থাকলেও তাঁদের চোখে শুলবিষ তারা। তাই নেহাতই এই বয়সে দিন গুজরান সাথে পেট চালাতে আর বাড়তি দুটো টাকার আশায় হাড় ভাঙা খাটুনি করে রোজ বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বালুরঘাট শহরের বিশ্বাসপাড়া এলাকায় ভুট্টা বিক্রি করছেন নৃপেন মহন্ত ও স্ত্রী অনিতা মহন্ত। এই বিষয়ে ভুট্টা বিক্রেতা নৃপেন মহন্ত বলেন, "রোজ সকালে তারা বাজার বা বিভিন্ন গ্রাম থেকে ভুট্টা সংগ্রহ করে কিনে এনে বিক্রি করেন। রোজ বিকেলে ভ্যানে করে কাঁচা ভুট্টা ১৫ টাকা ও পোড়া ভুট্টা ২০ টাকা পিস প্রতি বিক্রি করেন। এছাড়াও ভুট্টা আরও সুস্বাদু করতে লেবু লঙ্কা সহযোগে কিছু মসলা সংযোজন করা হয় বাড়তি স্বাদের লক্ষ্যে। সারাদিনে মাল কিনে ও বিক্রি করে রোজ ৩০০ টাকা করে আই করি, আর ওই টাকায় সংসার চলে আমাদের। সরকারি একটা ঘর আর বৃদ্ধ ভাতা পেলে খুব উপকৃত হতাম। ঘরে বৃষ্টিতে জল পরে আর শীতে ঠান্ডা খুব কষ্টে আছি। বয়স বাড়ছে জানিনা কতদিন এই গতরে খেতো রোজগার করতে পারবো। সব ভগবান ভরসা"। তবে এই ভুট্টার দোকানে সুস্বাদু ভুট্টা খেতে আবালবৃদ্ধবণিতা ভিড় জমান। রোজ বিকেল থেকে রাত অবধি ক্রেতাদের গরম গরম ভুট্টা দিতে হিমশিম খাওয়ার পাশাপাশি যারপরনাই হাসি মুখে তাঁদের ভুট্টা তুলে দেন এই মহন্ত দম্পতি তা বলাই বাহুল্য।
No comments:
Post a Comment